শনিবার ২২শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ Saturday 6th December 2025

শনিবার ২২শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২

Saturday 6th December 2025

প্রচ্ছদ

মানব পাচার: মিয়ানমারে জিম্মি ৩২ জন

২০২৩-০৫-১৫

সামিয়া রহমান প্রিমা
সিনিয়র রিপোর্টার

     

অবৈধ উপায়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে গত ২০ মার্চ কক্সবাজার থেকে সমুদ্রপথে রওনা হয়েছিলেন ৩২ জনের একটি দল। টেকনাফের দালাল তাদেরকে বিক্রি করে দিয়েছেন মিয়ানমার চক্রের হাতে। গত দোসরা এপ্রিল থেকে সবাই জিম্মি আছেন মিয়ানমারের মলামাইনে। মিয়ানমারের মলামাইনের বিভিন্ন কারাগারে বন্দী আছেন সবাই। তাদের মধ্যে ১৯ জন বাংলাদেশি, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। কক্সবাজারের ১৩ জনের মধ্যে বাংলাদেশি ও কয়েকজন রোহিঙ্গাও আছেন।    

 

অপরিচিত একটি বিদেশি নাম্বার থেকে হুট করেই বেশ কয়েকটি উড়ো চিঠি এসে পৌঁছায় লিটনের ফোনে। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার চৈতনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। হাতে লেখা এসব চিঠিতে জীবন বাঁচানোর আকুতি। তাদের খবর স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ। সকলের একই বার্তা বিপদে আছি, বাংলাদেশ দূতাবাস, পুলিশ ও সাংবাদিককে জানান। বাড়ি ফিরতে চাই। এসব চিঠি পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করছেন দুর্বৃত্তরা।   

 

সূত্র জানায়, করোনা মহামারীর পর বাংলাদেশ-মিয়ানমার- থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার একটি চক্র পুনরায় সক্রিয় হয়েছে। এই চক্রের সাথে জড়িত আছেন বিভিন্ন দেশের আইন শৃঙ্খলার সদস্যরাও। বন্দীদের ভয়াবহ নির্যাতন করা হয়। কারাগারে চালানের আগে দাবি করা হয় মুক্তিপণ। কখনো কখনো মুক্তিপণ আদায় করার পরেও পাঠিয়ে দেন কারাগারে। 

 

মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এ এস এম সায়েম জানান, অবৈধ অভিবাসনের কারণে মিয়ানমারে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে বেশিরভাগ শাস্তি হয় ২ বছর। বন্দী থাকা বাংলাদেশিদের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তথ্য সংগ্রহে ওয়াকিবহাল আছে ইয়াঙ্গুনের ঢাকা দূতাবাস।  

 

গ্রামবাসী জানান, মানব পাচারের সাথে জড়িত এই অঞ্চলের দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি জসীমউদ্দিন ও ইসমাইল। যারা এখনো পলাতক আছেন। মানব পাচার আইনে স্থানীয় দালালদের বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। তবে পুলিশের সঙ্গে দালালদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগ এর ভিত্তিতে থানা পুলিশ জানিয়েছে তদন্ত কার্যক্রম সিআইডিতে স্থানান্তর করা হবে। এদিকে এসব দালালদের বিচারের অপেক্ষায় আছেন গ্রামবাসী।