সোমবার ১৮ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ Monday 2nd June 2025

সোমবার ১৮ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

Monday 2nd June 2025

প্রচ্ছদ জীবন যেমন

দ্রব্যমূল্যের আগুনে নিভে গেল আকবর আলীর ভাতের হোটেলের চুলা

২০২২-০৯-০৪

   

৫ মাস আগে রায়ের বাজারের বেড়িবাঁধের ঢালে নতুন গ্যারেজ বসিয়েছেন সামছু মহাজন। আগে তার গ্যারেজটি ছিল মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যানে । চাঁদ উদ্যান থেকে আসার সময় আকবর আলীকে তিনি সাথে করে নিয়ে এসেছিলেন। অত্যন্ত বিনয়ী আর সুস্বাদু খাবারের রাঁধুনি হিসেবে তার ও স্ত্রী ময়নুর বেগমের সুনাম রয়েছে। রিকশাচালকরা অনিয়মিত শ্রমিক বলে তাদের আকর্ষণ করার নানান বন্দোবস্ত করতে হয় মহাজনদের। আকবরের ভাতের মেসের সুনামে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই সামছু মহাজনের রিকশার গ্যারেজ চালকে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।  

 

শুরুর দিকে রিকশাচালকরা প্রতিদিন সকালের নাস্তা, দুপুর আর রাতের খাবারসহ পেট চুক্তি একশ দশ টাকায় খেতে পারতেন তার মেসে। আকবর মিয়া আর তার স্ত্রী ময়নুর বেগম দুজনের মিলে প্রতিবেলার ৭০ জনের জন্য রান্না করতেন।

 

মেস চালু করার পরবর্তী ৫ মাসের মাঝে আকবর আলী ধাপে ধাপে খাবারের দাম বাড়িয়ে ১১০ থেকে ১২০ এবং শেষে ১৩০ টাকা নির্ধারণ করেছেন। কিন্তু এখন আর পারছেন না। প্রতিদিন সন্ধ্যায় আকবর মিয়া বাজারে গিয়ে জিনিসপত্রের দামের পার্থক্য দেখে নিজেই অবাক হন। প্রায় আট বছর মেস চালানোর অভিজ্ঞতা তার। তবে এমন করে কখনোই দেখেননি, প্রতিবেলায় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। 

 

প্রতিমাসে লোকশান হচ্ছিল তার। গেল মাসে লোকসানের পরিমাণ দশ হাজার টাকার বেশি। বাধ্য হয়ে আজ দু সপ্তাহ যাবৎ মেস বন্ধ করে দিয়েছেন। 

 

আকবর আলীর মেস বন্ধ করে দেওয়ায় বিপদে পড়েছেন গ্যারেজে থাকা ৭০ জন রিকশাচালক। তারা বাধ্য হয়ে হোটেলে খাবার খাচ্ছেন। কিন্তু কারোই হোটেলে খাবার খেয়ে পোষাচ্ছে না। এক বেলা বাইরে খাবার খেলেই ৭০-৮০ টাকা চলে যাচ্ছে। তার উপর আকবর আলীর মানের মত খাবার খাওয়া সম্ভব নয়।  আয়ের একটা বড় অংশ  খাবারের জন্যই ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে রিকশা চালকরা গ্যারেজ ছাড়ছেন, কেউ কেউ বাড়িতে চলে যাচ্ছেন।