বুধবার ১১ই বৈশাখ ১৪৩১ Wednesday 24th April 2024

বুধবার ১১ই বৈশাখ ১৪৩১

Wednesday 24th April 2024

প্রচ্ছদ প্রতিবেদন

পুকুর চুরি, নিষ্ক্রিয় জেলা প্রশাসক

২০২২-০৯-০৬

দৃকনিউজ প্রতিবেদন

     

সরকারি তথ্য অনুযায়ী ঢাকা জেলা প্রশাসনের কর্তত্বে প্রায় শতাধিক পুকুর বাস্তবে এগুলোর বড় একটি অংশ পুকুর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির দখলে রয়েছে। তারা এসব পুকুর অবৈধভাবে ভরাট করে কোথাও নির্মাণ করা করেছেন বসত-বাড়ি আবার কোথাও নির্মিত হয়েছে শিল্প-কারখানা। চুরি হয়ে যাওয়া ঢাকার এসব পুকুর নিয়ে দৃক নিউজের ধারাবাহিক অনুসন্ধানের প্রথম পর্ব আজ।
 
রাজধানীর মোহম্মদপুরের বসিলায় ২২ শতক জায়গার সরকারি একটি পুকুর অবৈধভাবে দখল করে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। কাগজপত্রে স্বয়ং জেলা প্রশাসক পুকুরের মালিক হলেও এবং তিন বছর ধরেই বড়সড় এই পুকুরচুরি নিয়ে জেলা প্রশাসন বিষয়ে অবগত থাকলেও পুকুরটিকে দখলমুক্ত করার কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।


কোন প্রকার ইজারা বা অনুমতি ছাড়াই প্রায় আট বছর আগে পুকুরটি ভরাট করা শুরু করেন স্থানীয় মো: গোলাম মাওলা ওরফে মিঞা লাল নামে এক ব্যক্তি। ক্রমান্বয়ে সে জায়গার এক অংশে দুটি পাকা দালান ও অপর অংশে বেশ কয়েকটি টিন সেড ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে রেখেছিলেন তিনি। ২০২১ সালে মিঞা লাল মারা যাওয়ার পর তার চার সন্তান সে জায়গার দখল নিয়েছেন। স্থানীয় মানুষজনের মতে, এই জায়গাটির বাজার দাম প্রায় ১১ কোটি টাকারও বেশি।  
 
২০১৯ সালে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে জানা যায়, পর্চা অনুযায়ী প্রয়াত মিঞা লালের দখলকৃত জায়গাটির প্রকৃত মালিক ঢাকা জেলা প্রশাসক, এটি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বছিলা এলাকার ওয়াশপুর মৌজার আর এস ১ নং খতিয়ানভুক্ত ৫৭১ নং দাগের ২২ শতক জায়গাটি পুকুর শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত।
 
এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত ছিলেন ব্যক্তি মিঞা লাল। তার সন্তানরা এখন এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছেন। স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলতে গেলে কেউই মুখ খুলতে চাননি।
 
পুকুর দখলের বিষয়ে দৃকনিউজের পক্ষ থেকে প্রয়াত মিঞা লালের চার পুত্রের মধ্যে কবির ও হুমায়ুনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে এ জায়গাটিতে পুকুর ছিল বলে স্বীকার করেন তারা।

 
দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বসবাস করলেও তাদের কেউই জায়গাটির কোন বৈধ কাগজ-পত্র দেখাতে পারেননি।
 
দৃকনিউজের আবেদনের প্রেক্ষিতে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রোহিতপুর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো আনোয়ার হোসেন এ বিষয়ে তদন্ত করেন। তার সাথে দেখা করতে রোহিতপুর ভূমি অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে মোবাইল ফোনে দৃক নিউজের সাথে কথা বলেন তিনি।
 
এতোদিনেও পুকুরটি উদ্ধার না হলেও জেলা প্রশাসন থেকে নির্দেশনা আসা মাত্রই পুকুরটি উদ্ধার করবেন বলে জানিয়েছেন কেরানীগঞ্জের সহকারী ভূমি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মো আলাউল ইসলাম।
 
এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে দৃক নিউজের অনুসন্ধানের পর হারিয়ে যাওয়া এই পুকুর উদ্ধারে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।

Your Comment