শনিবার ৭ই বৈশাখ ১৪৩১ Saturday 20th April 2024

শনিবার ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

Saturday 20th April 2024

সংস্কৃতি চলচ্চিত্র-নাটক

দীপ্তিহীন বলিউড, উজ্জ্বল অন্যান্য দক্ষিণ এশিয় কারখানা

২০২২-০৯-০৪

ফাহমিদুল হক

বৈশ্বিক দর্শক-শ্রোতার কাছে দক্ষিণ এশিয় চলচ্চিত্র মানেই বলিউড। বিদেশে সত্যজিৎ-ঋত্বিকদের আর্ট সিনেমার পরিচিতি অবশ্য আছে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে ভারতীয় চলচ্চিত্র হিসেবে বিদেশিরা বলিউডকেই চেনে। এককালে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও পূর্ব ইউরোপে হিন্দি চলচ্চিত্রের বাজার ছিলই। অধুনা বলিউড প্রযোজিত চলচ্চিত্রগুলো পৃথিবীর সব বড় শহরের মাল্টিপ্লেক্সে প্রদর্শিত হয়। প্রথম দিকে অনাবাসিক ভারতীয়রাই এসব ছবি দেখত, পরের দিকে লন্ডন বা নিউ ইয়র্কের সব ধরনের দর্শকই বলিউডের ছবি দেখা শুরু করেন। ভরত মুনির নাট্যশাস্ত্রে বর্ণিত বিবিধ ভাব ও রসের নান্দনিক দিকটি ধার করে চলচ্চিত্রে নাচ ও গানের বর্ণিল উপস্থাপন বলিউড-চলচ্চিত্রের এক বিশেষ সাক্ষর। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য চলচ্চিত্র কারখানাতে যুগ যুগ ধরে বলিউডের কাঠামো বা টেমপ্লেট ব্যবহার করেই চলচ্চিত্র নির্মিত হয়ে থাকে।

 

 

 

"দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে" চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য। এ ধরনের দশকপ্রিয় চলচ্চিত্রের এখন বলিউডে দেখা মেলে না।  

 

 

একসময় যা হিন্দি চলচ্চিত্রের কারখানা ছিল ১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে “দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে” (১৯৯৫), “কুচ কুচ হোতা হ্যায়” (১৯৯৮), “তাল” (১৯৯৮) এবং সমসাময়িক অন্য অনেক চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বলিউডের বিকাশ ঘটে। ভারতীয় ও বৈশ্বিক- দুধরনের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সংমিশ্রণে এই চলচ্চিত্রগুলো নির্মিত হয়েছে একটি উদারনৈতিক ও মুক্ত বাজারে। সম্ভাব্য দর্শক হিসেবে এসব চলচ্চিত্রের লক্ষ্য ছিল প্রবাসী ভারতীয় (এবং দেশের স্থানীয় দর্শকদেরকেও সন্তুষ্ট করা)। চলচ্চিত্রের কাহিনী প্রায়শই ইউরোপ বা আমেরিকার শহরে চলে যায়, কিন্তু চরিত্ররা সবসময় মননে ভারতীয়ই থাকে। ১৯৯৮ সালে সরকার চলচ্চিত্রকে ‘শিল্পের মর্যাদা’ দেওয়ার ঘোষণা দেয় এবং ১৯৯৯ সালে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও বণ্টনে ১০০% বিদেশী বিনিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়। বলিউডের ছবির অন্যতম একটি দিক হলো এর রফতানিমুখিতা। আশিস রাজাধ্যক্ষ (২০০৩) পুরো প্রক্রিয়াটিকে বলিউডকরণ (বলিউডাইজেশন) হিসেবে বর্ণনা করেন এবং লক্ষ্য করেন যে, দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র কারখানা খুব জমজমাট হলেও, তাদের যেটার অভাব সেটা হলো বলিউডকরণ। দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র এতদিন তাদের নিবেদিতপ্রাণ স্থানীয় দর্শকদের নিয়েই খুশি ছিল। যাই হোক, এখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে এবং এই নিবন্ধে বলিউডের ছবির সাম্প্রতিক মন্দাবস্থা, দক্ষিণ ভারতীয় ও দক্ষিণ এশিয় অন্যান্য দেশের চলচ্চিত্রের পরিবর্তনশীল দিকগুলোকে বিশ্লেষণ করতে এখানে রাজাধ্যক্ষের বলিউডকরণের তাত্ত্বিক ধারণা এখানে আমাদের সাহায্য করবে।

 

তেলেগু চলচ্চিত্র (২০১৫) এর বিশ্বব্যাপী সাফল্যের পর দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র কারখানাতেও বলিউডকরণের প্রবণতা দেখা যায়। এরপর “বাহুবলি ২: দ্য কনক্লুশন” (২০১৭), “পুষ্পা: দ্য রাইজ-পার্ট ওয়ান” (২০২১), “আরআরআর” (২০২২), “কেজিএফ: চ্যাপ্টার টু” (২০২২) এর মতো চলচ্চিত্রগুলো একটা নতুন পরিচয় পায় - সেটা হলো ‘সর্ব-ভারতীয় (প্যান ইন্ডিয়ান) চলচ্চিত্র।

 

এই চলচ্চিত্রগুলো নির্মিত হয়েছে চেন্নাই, হায়দরাবাদ, কোচি এবং ব্যাঙ্গালোরের মতো দক্ষিণ ভারতীয় শহরগুলোতে। সর্বভারতীয় দর্শকদের জন্য মুক্তি পাওয়ার জন্য এগুলো আজকাল হিন্দিতে ডাব করে মুক্তি দেওয়া হয়। তাই এগুলো ভারতের সবচেয়ে বেশি আয় করা চলচ্চিত্রে পরিণত হয়। আইএমডিবির বক্স অফিস রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১ সালে সর্বাধিক আয় করা দশটি চলচ্চিত্রের মধ্যে মাত্র দুটি বলিউডের।

 

 

এই চলচ্চিত্রগুলো নির্মিত হয়েছে চেন্নাই, হায়দরাবাদ, কোচি এবং ব্যাঙ্গালোরের মতো দক্ষিণ ভারতীয় শহরগুলোতে। সর্বভারতীয় দর্শকদের জন্য মুক্তি পাওয়ার জন্য এগুলো আজকাল হিন্দিতে ডাব করে মুক্তি দেওয়া হয়। তাই এগুলো ভারতের সবচেয়ে বেশি আয় করা চলচ্চিত্রে পরিণত হয়। আইএমডিবির বক্স অফিস রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১ সালে সর্বাধিক আয় করা দশটি চলচ্চিত্রের মধ্যে মাত্র দুটি বলিউডের।

 

 

সমালোচকদের মতে, দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র এখন বলিউডের চেয়ে এগিয়ে আছে। কারও কারও মতে, এই মুহূর্তে এককভাবে তেলুগু চলচ্চিত্র কারখানার আয় বা আকার বলিউডের চেয়ে বেশি। ফিল্ম কম্প্যানিয়ন নামে সমালোচকদের একটি প্ল্যাটফর্ম “২০২১ সালের সেরা ভারতীয় চলচ্চিত্র” বিষয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করে। নির্বাচিত পনেরোটি চলচ্চিত্রের মধ্যে মাত্র তিনটি চলচ্চিত্র বোম্বেতে নির্মিত, দুটি চলচ্চিত্রের ভাষা হিন্দি এবং একটির ভাষা মারাঠি। বাকি সবগুলো চলচ্চিত্রই বিভিন্ন দক্ষিণ ভারতীয় শহরে নির্মিত হয়েছে। সাধারণভাবে কেরালার মালয়ালাম ভাষার চলচ্চিত্র সমালোচকদের কাছে নন্দন ও শিল্পের বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি আদৃত। দেখা যাচ্ছে ব্যবসা অর্থে এবং নন্দন ও শিল্পের বিচারে বলিউড পিছিয়ে গেছে, এগিয়ে গেছে দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র কারখানাগুলো।

 

চলচ্চিত্রকে একটা সর্ব-ভারতীয় চরিত্র দেওয়ার জন্য মাঝেমাঝে এসব ছবিতে বলিউড তারকাদের নেওয়া হয় (যেমন, “আরআরআর” এ অজয় দেবগন ও আলিয়া ভাট এবং “কেজিএফ টু” তে সঞ্জয় দত্ত ও রাভিনা ট্যান্ডন)। যদিও এসব চলচ্চিত্র সর্ব-ভারতীয় হিসেবে পরিচিত, তবু এসব চলচ্চিত্রেও বলিউডকরণের প্রয়োগ দেখা যায়। অর্থাৎ দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্রগুলো কেবল সর্বভারতীয় হয়নি, রফতানিমুখীও হয়ে উঠেছে। বিশ্ববাজারে বিপণন তারা শিখে গেছে। বলিউডের বিপণন প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে গেছে, দক্ষিণের ছবিকে বিপণনের জন্য। কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোরে নির্মিত কন্নড় চলচ্চিত্র “কেজিএফ টু” এর আন্তর্জাতিক সাফল্যের প্রতিবেদন করতে গিয়ে ”ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস” জানায়, “দঙ্গল”, “বাহুবলি টু” এবং “আরআরআর”-এর পরে “কেজিএফ টু” আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের সর্বকালের চতুর্থ সর্বাধিক আয়কারী চলচ্চিত্র। এই তালিকায় থাকা চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে একমাত্র “দঙ্গল” বলিউডের ছবি। “বাহুবলি টু” এবং “আরআরআর” দুটিই এস এস রাজামৌলি পরিচালিত তেলুগু ছবি।

 

ফিকশন চলচ্চিত্রের আধিপত্যের কালে শীর্ষ আন্তর্জাতিক সাফল্যের প্রাপ্তি রয়েছে ভারতীয় প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতাদের ঝুলিতে। রিন্টু থমাস এবং সুস্মিত ঘোষের “রাইটিং উইথ ফায়ার” (২০২১) ২০২২ সালের একাডেমি অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়। ২০২২ সালের কানে শৌনক সেনের “অল দ্যাট ব্রিদস” (২০২১) শীর্ষ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার (গোল্ডেন আই) অর্জন করে।

 

এরপরেও অনুরাগ কশ্যপ ও তার বন্ধুদের পরিচালিত কম বাজেটের এবং কনটেন্টভিত্তিক নিউ বলিউড সিনেমা  নিয়ে গর্ববোধ করতে পারে বলিউড। কিন্তু যাতে তার বিদ্যার বহর, সেক্ষেত্রে বলিউড তার গরিমা প্রায় হারিয়েই ফেলেছে -- বড় বাজেটের, মশলাদার এবং ফর্মুলামতো যাতে নাচ-গান আছে। এর সমান্তরালে দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র এর নিজস্ব দক্ষিণী ম্যানারিজম নিয়ে দীপ্তি ছড়াচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রিও উন্নতি করছে।

 

“বোল” (২০১১) ছবির পর পাকিস্তানে একটি নবতরঙ্গ চলছে। দেশটি এমন সব ফিকশন চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে যা একইসঙ্গে সমালোচকদের কাছে সমাদৃত এবং ব্যবসায়িকভাবে সফল। কানাডাভিত্তিক পাকিস্তানি চলচ্চিত্র নির্মাতা শারমীন ওবাইদ-চিনয় তার প্রামাণ্যচিত্র “সেইভিং ফেইস” (২০১৩) এবং “এ গার্ল ইন দ্য রিভার: দ্য প্রাইস অফ ফরগিভনেস” (২০১৩) এর জন্য দুবার একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন। সাইম সাদিকের “জয়ল্যান্ড” (২০২১) স্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত চলচ্চিত্র হিসেবে কান চলচ্চিত্র উৎসবে “আ সার্তে রিগ” ক্যাটাগরিতে জুরি পুরস্কার অর্জন করে।

 

 

বাংলাদেশ থেকে কান চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রণ পাওয়া প্রথম ছবি "মাটির ময়না"(২০০২)। এটি সমালোচক পুরস্কার পায়। বাংলাদেশ থেকে অস্কারের জন্য মনোনীত প্রথম চলচ্চিত্রও এটি

 

 

১৯৮০ এর দশক থেকে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন চলচ্চিত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এখানে তারেক মাসুদের “মাটির ময়না” (২০০২, কানের ডিরেক্টরস ফোর্টনাইটে সমালোচক পুরস্কারপ্রাপ্ত), মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর “টেলিভিশন” (২০১২,গ্র্যান্ড জুরি পুরস্কার এবং এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন পুরস্কারপ্রাপ্ত) এর মতো অনেক উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের “রেহানা মরিয়ম নূর” (২০২১) কানের “আ সার্তে রিগা” ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়েছে। কামার আহমাদ সাইমনের “অন্যদিন…” (২০২১) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্যচিত্র উৎসব নেদারল্যান্ডের ইডফাতে মনোনীত হয়েছে। শুধু "মাটির ময়না"র মত ভিন্নধারার চলচ্চিত্রই নয়, ওটিটি প্ল্যাটফর্মের আবির্ভাবের ফলে ইতোমধ্যেই দৃশ্যপটে কিছু নতুন প্রজন্মের চলচ্চিত্র নির্মাতার আনাগোনাও দেখা যাচ্ছে।

 

এখানে তারেক মাসুদের “মাটির ময়না” (২০০২, কানের ডিরেক্টরস ফোর্টনাইটে সমালোচক পুরস্কারপ্রাপ্ত), মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর “টেলিভিশন” (২০১২,গ্র্যান্ড জুরি পুরস্কার এবং এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন পুরস্কারপ্রাপ্ত) এর মতো অনেক উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের “রেহানা মরিয়ম নূর” (২০২১) কানের “আ সার্তে রিগা” ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়েছে। কামার আহমাদ সাইমনের “অন্যদিন…” (২০২১) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্যচিত্র উৎসব নেদারল্যান্ডের ইডফাতে মনোনীত হয়েছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মের আবির্ভাবের ফলে ইতোমধ্যেই দৃশ্যপটে কিছু নতুন প্রজন্মের চলচ্চিত্র নির্মাতার আনাগোনাও দেখা যাচ্ছে

 

 

সিদিক বারমাকের “ওসামা” (২০০৩) দেখার পরে বিশ্ব প্রথম জানতে পারে যে, আফগানিস্তানও অসাধারণ চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে। আতিক রাহিমির “আর্থ অ্যান্ড অ্যাশেজ” (২০০৪) কানের “আ সার্তে রিগা” বিভাগে প্রতিযোগিতার জন্য মনোনীত হয়েছিল। স্যাম ফ্রেঞ্চের অস্কার-মনোনীত শর্টফিল্ম “বুজকাশি বয়জ” (২০১১) একটি আফগান-যুক্তরাষ্ট্র সম্মিলিত প্রযোজনা। সংক্ষিপ্ত প্রামাণ্যচিত্র বিভাগে অস্কার মনোনীত আরও চলচ্চিত্র হলো গুলিস্তান মিরজাই এবং এলিজাবেথ মিরজাই-এর “থ্রি সংস ফর বেনজীর” (২০২১)। আফগানিস্তানে নারী চলচ্চিত্র নির্মাতার সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য, যারা মূলত প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এই চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নামের তালিকাটাও বেশ লম্বা -- সাহরা কারিমি, শহরবানু সাদাত, সাহরা মানি এবং রয়া সাদাত। যাই হোক, ২০২১ সালে তালিবানদের আফগানিস্তান অধিকারের পর আফগান ফিল্ম অর্গানাইজেশনের সভাপতি সাহরা কারিমিকে দেশ ছাড়তে হয় এবং আফগান সিনেমার সম্ভাবনার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়।

 

ভুটানের বৌদ্ধ ভিক্ষু খ্যেন্তসে নরবু বেশ কিছু পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন, যার মধ্যে আছে “দ্যা কাপ” (১৯৯৪) এবং “দ্য ট্র্যাভেলার্স অ্যান্ড ম্যাজিশিয়ানস” (২০০৩)। তার সহকারী পাওয়ো চোয়নিং দর্জি নির্মাণ করেছেন “লুনানা: এ ইয়াক ইন দ্য ক্লাসরুম” (২০২১), যা বিদেশী ভাষার সেরা চলচ্চিত্র বিভাগে ২০২২ সালে অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিল। নেপালের চলচ্চিত্র কারখানা ব্যাপক মাত্রায় বলিউড কর্তৃক প্রভাবিত ছিল। যাই হোক, নিশ্চল বাসনেতের “লুট” (২০১২)-এর পর থেকে নেপাল ব্যবসায়িকভাবে সফল এমন সব ছবি তৈরি করছে যা বলিউডের প্রভাবমুক্ত।

 

দক্ষিণ ভারতীয় কারখানাগুলোকে বাদ দিলে, দশকের পর দশক ধরে বলিউড দক্ষিণ এশিয়ার অন্য সব কারখানার ওপর প্রভাব বিস্তার করে এসেছে। অতি সম্প্রতি এই চিত্র পাল্টেছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য কারখানাও তাদের নিজস্ব গল্প বলার চেষ্টা করছে, এবং তারা বলিউডের গৎবাধা ছককে ছাপিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। এরপরেও সম্ভবত এর নিজস্ব সংজ্ঞার আলোকেই বলিউডকরণের ধারণাটি এখনও বাতিল হয়নি। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেওয়া এবং সেখানে পুরস্কার পাওয়া, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সহ-পরিচালক খুঁজে নেওয়া, ব্যাপক কিংবা সীমিত আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তি পাওয়া এবং আন্তর্জাতিক ওটিটি বা ডিজিটাল মাধ্যমে স্থান দখল করার কারণেই বিষয়টি এখনও প্রাসঙ্গিক।

 

 

দশকের পর দশক ধরে বলিউড দক্ষিণ এশিয়ার অন্য সব কারখানার ওপর প্রভাব বিস্তার করে এসেছে। অতি সম্প্রতি এই চিত্র পাল্টেছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য কারখানাও তাদের নিজস্ব গল্প বলার চেষ্টা করছে, এবং তারা বলিউডের গৎবাধা ছককে ছাপিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। এরপরেও সম্ভবত এর নিজস্ব সংজ্ঞার আলোকেই বলিউডকরণের ধারণাটি এখনও বাতিল হয়নি। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেওয়া এবং সেখানে পুরস্কার পাওয়া, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সহ-পরিচালক খুঁজে নেওয়া, ব্যাপক কিংবা সীমিত আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তি পাওয়া এবং আন্তর্জাতিক ওটিটি বা ডিজিটাল মাধ্যমে স্থান দখল করার কারণেই বিষয়টি এখনও প্রাসঙ্গিক।

 

 

বলিউড থেকেই বলিউডকরণের ধারণা, কিন্তু অন্যান্য কারখানাও যখন বলিউডকরণের বিষয়টি শিখে যাচ্ছে, তারা তখন বলিউডের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে।

 

লেখাটি“এশিয়ান মুভি পালস ডট কম” থেকে ভাষান্তর করেছেন দীপান্বিতা কিংশুক ঋতি

 

 

ফাহমিদুল হক

চলচ্চিত্র সমালোচক ও গবেষক