দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের মিডিয়া ফ্লোটিলায় যোগ দিতে আগামীকাল গাজার উদ্দেশ্যে ইতালি রওনা দিচ্ছেন।
রাজধানীর পান্থপথে দৃকপাঠ ভবনে শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, দুপুর তিনটায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম জানান ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র অংশ হিসেবে ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ এর আরেকটি নৌবহর রওনা হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের একজন হিসেবে যাত্রা করবেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে, শহিদুল আলম গাজাতে ইনফরমেশন/মিডিয়া ব্ল্যাকআউট ভাঙ্গার উদ্দেশ্যে, আয়োজিত ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়লিশন কর্মসূচীর লক্ষ্যে ও ফিলিস্তিনের সংগ্রামরত জনগণের প্রতি তার সংহতি বার্তা উপস্থাপন করেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এ কোয়ালিশনে যোগ দিতে গাজার উদ্দেশ্যে ইতালি রওনা দিচ্ছেন, আগামীকাল রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নৃবিজ্ঞানী, লেখক ও দৃকের পরিচালক রেহনুমা আহমেদ, দৃকের জেনারেল ম্যানেজার ও কিউরেটর এএসএম রেজাউর রহমান, দৃকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. কামাল হোসেন এবং সাংবাদিক, গবেষক ও দৃকের পরিচালক সায়দিয়া গুলরুখ।
সংবাদ সম্মেলনের সূচনা বক্তব্যে সায়দিয়া গুলরুখ বলেন, “ফিলিস্তিন মুক্তির সংগ্রামের এক ক্রান্তিলগ্নে আমরা আজকে এখানে উপস্থিত হয়েছি। আপনারা জানেন যে ৭৭ বছরের ঔপনিবেশিক আগ্রাসনের নৃশংসতম অধ্যায় শুরু হয়েছে দুই বছর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখ । সারা পৃথিবীর মানুষের প্রতিবাদ-প্রতিরোধকে উপেক্ষা করে গাজাকে বহুকাল (২০০৭) ধরে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। অবরুদ্ধ গাজায় মানুষ নির্বিচার গণহত্যার শিকার, চলছে ইজরায়েল-সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ।
এই অবরোধ ভাঙ্গার লক্ষ্যে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের উদ্যোগে ৩০ শে অগাস্ট ত্রাণসামগ্রী নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্নপ্রান্ত থেকে প্রায় ৫০০জন নাগরিক গাজার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। এই গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলাতে ইতিমধ্যে দুইবার আক্রমণ করেছে ইজরায়েল, এই মুহূর্তে নৌবহরটি গাজার পথে ইজরায়েলি আগ্রাসনের বিপজ্জনক জোনে প্রবেশ করেছে। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আলোকচিত্রী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম গ্লোবাল মিডিয়া ফ্লোটিলাতে যোগ দেবার জন্য আগামীকাল ইতালি হয়ে গাজার উদ্দেশ্য রওনা দেবেন।
গ্লোবাল মিডিয়া ফ্লোটিলাতে যোগদান প্রসঙ্গে শহিদুল আলম বলেন, “এই মুহূর্তে গাজায় গনহত্যা চলছে। ইসরায়েল এবং আমেরিকা একসাথে ফিলিস্তিনে, গাজায় মানুষকে খুন করছে। তার সাথে পাশ্চাত্যের অনেকগুলো দেশ যুক্ত, তারাও সহযোগিতা করছে, এবং তারাও এতে অংশীদার। কিন্তু পৃথিবীর অনেক দেশের অনেক মানুষ, সারা পৃথিবীর মানুষ এর প্রতিবাদ করছে। এই প্রতিবাদের সাথে সংহতি রেখে আমি আগামীকাল মিডিয়া ফ্লোটিলায় যোগ দিতে যাচ্ছি। আমি যাচ্ছি বাংলাদেশের প্রথম একজন, কিন্তু আমি মনে করি বাংলাদেশের সকল মানুষের ভালবাসা আমি সাথে নিয়ে যাচ্ছি। এবং এই সংগ্রামে শুধু আমাদের থাকতে হবে না, এতে যদি আমরা পরাজিত হই, তাহলে মানবজাতি পরাজিত হবে।“
তিনি আরও বলেন, “যতদূর জানি এর আগে কোনো বাংলাদেশি এই ফ্লোটিলায় যান নি। এই মিডিয়া ফ্লোটিলাতে কারা কারা আছে, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। আমার জানামতে, সম্ভবত এই প্রথম বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণ করা হচ্ছে।“